বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৫ অপরাহ্ন
সাম্প্রতিক সময়ে বিসিএস ক্যাডার কর্মকর্তা হিসেবে বিপুল সংখ্যক নারী চাকরি পেয়েছেন। গত ৫টি বিসিএসে নারীদের চাকরি পাওয়ার হার প্রায় ৩৫ শতাংশ। যেটা আগে অনেক কম ছিল। পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) উপর মানুষের আস্থাও অনেকে বেড়েছে। একই সঙ্গে খুব দ্রুত বিসিএসের রেজাল্টও হচ্ছে। ফলে শিক্ষার্থীরা একাধিক বিসিএস দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।
দৈনিক ইত্তেফাককে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে এ সব কথা বলেছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক। বর্তমানে পিএসসির প্রতি শিক্ষার্থীর আস্থা বেড়েছে। পরীক্ষার্থীর সংখ্যাও বেড়েছে। কারণ কি? জানতে চাইলে ড. সাদিক বলেন, সরকার পিএসসিকে সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছে। ফলে যোগ্য প্রার্থীরাই কেবলমাত্র বিসিএসে সুযোগ পাচ্ছে। এ ছাড়া সরকার ৮ম জাতীয় বেতন স্কেলে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন প্রায় দ্বিগুণ করাসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করেছে। এ সব কারণেই বিসিএসে প্রার্থীর সংখ্যা বেড়েছে।
আপনার আড়াই বছরে কত প্রার্থীকে নিয়োগের সুপারিশ করেছেন? সংখ্যাগুলো যদি আলাদা করে বলেন ? ড, সাদিক বলেন, এখানে চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার আগে আমি সদস্য হিসেবে কিছুদিন কাজ করেছি। শুরু থেকেই আমার চেষ্টা ছিল সরকারের শূন্য পদগুলোতে দ্রুততার সঙ্গে নিয়োগ সম্পন্ন করা। আমার সময়ে ৩ টি বিসিএসে ৫ হাজার ৮১৮ জনকে ক্যাডার পদে নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হয়েছে। এ ছাড়াও ৩৮তম, ৩৯তম বিসিএস-এর কার্যক্রম চলছে এবং ৪০তম বিসিএস-এর নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে। আমরা ৩৫ তম বিসিএস থেকে ৩৬তম বিসিএস নন-ক্যাডারে ৩ হাজার ২৯৪ জনকে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করতে পেরেছি। সিনিয়র স্টাফ নার্স পরীক্ষায় ১৫ হাজার ৭৩৩ হাজার পরীক্ষার্থীকে নিয়োগের জন্য সুপারিশসহ নন-ক্যাডার বিভিন্ন পদে ১৯ হাজার ৫৯৪ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করেছি। স্বাধীনতার পর পিএসসি এ পর্যন্ত ১০টি সুপিরিয়র সার্ভিস পরীক্ষায় ২ হাজার ৩২৫ জন এবং ৩৭টি বিসিএস পরীক্ষায় ৬১ হাজার ৬১৬ জনসহ সর্বমোট ৬৩ হাজার ৯৪১ জনকে ক্যাডার পদে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। আমি মনে করি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে এ প্রতিষ্ঠানটি তার উপর অর্পিত দায়িত্ব অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করতে সক্ষম হয়েছে।
ড. সাদিক বলেন, আগে প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ১০০ মার্ক ছিল। এখন সেটা ২০০ মার্ক হয়েছে। সংসদীয় কমিটির অন্যতম একটি পর্যবেক্ষণ ছিল ১০০ মার্কসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা দ্বারা একজন পরীক্ষার্থীর যথাযথ মূল্যায়ন হয় না। তাই বর্তমানে ২০০ মার্কসের পরীক্ষা হচ্ছে। এখন কোনো প্রশ্ন ফাঁস হয় না। কয়েক সেট প্রশ্ন তৈরি করি আমরা। পরীক্ষার আধা ঘণ্টা আগে লটারি করে একটা সেট জানিয়ে দেই।
বিসিএস পরীক্ষায় আগামীতে কোনো পরিবর্তন আসছে কি না প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিসিএস পরীক্ষার ব্যবস্থাপনা একটি চলমান প্রক্রিয়া। এর গুণগত মান উন্নত করার জন্য প্রতিনিয়ত বিশেজ্ঞদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা, সেমিনার, ওয়ার্কশপ হচ্ছে। এগুলোতে প্রাপ্ত সুপারিশ বাস্তবায়ন একটি চলমান প্রক্রিয়া।
পিএসসি অন্য সব ক্যাডারে দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে নিয়োগের সুপারিশ করে? পুলিশের সব ইন্সপেক্টর তো দ্বিতীয় শ্রেণির পদ। তাদের নিয়োগ কেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেয় ? জবাবে তিনি বলেন, পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর পদটি আগে ৩য় শ্রেণির ছিল। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার প্রেক্ষিতে এ পদ ৩য় থেকে ২য় এবং অফিসার ইনচার্জ (ওসি) পদটি প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত করা হয়। কিন্তু পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর পদটির নিয়োগ বিধি সংশোধন করা হয়নি। এ ছাড়াও এ পদে নিয়োগের জন্য প্রার্থী বাছাইয়ের পদ্ধতি বিশেষ ধরনের। যে কারণে সরকার এটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে নিয়োগ দিয়ে থাকে।
সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে চলতে গিয়ে কি পিএসসিকে কোনো বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে? উত্তরে তিনি বলেন, না হয়নি। সরকার অনেক আন্তরিক এবং আমরা সরকারের পক্ষ হতে সব ধরনের সহায়তা পেয়ে আসছি। সূত্র- ইত্তেফাক